ঢাকা ১০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোনালদোর সঙ্গে দ্বৈরথকে ‘চমৎকার’ আখ্যা দিয়ে যা বললেন মেসি

একসঙ্গে জিতেছেন ১৩টি ব্যালন ডি’অর। বলতে গেলে দু’জন একসঙ্গে যখন ইউরোপীয় ক্লাব মাতাচ্ছেন, তখন তাদের ধারেকাছে ছিল না কেউই। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায়ও ফুটবল ভক্তদের কাছে মোটেও আকর্ষণ কমেনি আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি ও পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। বর্তমানে উভয়েই আছেন ইউরোপের আঙিনা পেরিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই ভুবনে। তবে থেমে নেই তাদের দ্বৈরথ ও ‘কে সেরা’র পুরোনো বিতর্ক!

মেসি ও রোনালদো ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তাদের একের পর এক ছাড়িয়ে যাওয়া পারফরম্যান্স দিয়ে দর্শকদের দীর্ঘ সময় ধরে বুঁদ করে রেখেছিলেন। তাদের ব্যক্তিগত এই সেরা হয়ে ওঠার প্রতিযোগিতা ঐতিহাসিকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল দুই স্প্যানিশ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের মাঝেও। অসংখ্য রেকর্ড, ব্যক্তিগত মাইলফলক ও শিরোপা জয়ে উভয়েই গড়েছেন বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। যা কেবলই উন্মাদনা বাড়িয়ে চলেছে রোনালদো ও মেসির ভক্তদের মাঝে।

এখনও দুই মহাতারকার নাম বলতেই মুগ্ধতা ঝরে ফুটবল সংশ্লিষ্টদের চোখে। অবশ্য দুই তারকার মধ্যে কে সেরা সেই বিতর্কেও হরহামেশা জড়াতে দেখা যায় তাদের। তারা নিজেরাও কখনও কখনও সেই উত্তেজনায় ঘি ঢালেন। সম্প্রতি ফ্রান্স সাময়িকীর মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মেসি। সেখানে তিনি কথা বলেছেন রোনালদোর সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা, নিজেদের মতো সময়টা উপভোগ করা এবং পরস্পরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার তাড়না প্রসঙ্গে।

ব্যালন ডি’অরের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত ভিডিওতে বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, ‘এই লড়াই সব সময়ই ছিল। ক্রীড়ার পরিভাষায় এই দ্বৈরথ খুবই চমৎকার। আমরা পরস্পরকে আরও ভালো পারফর্মার হতে ক্রমাগত চাপ দিয়ে গেছি, কারণ দুজনেই ছিলাম চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। সে (রোনালদো) সব সময়ই সবকিছু জিততে চাইতো, একইভাবে আমিও। আমাদের এবং ফুটবল সমর্থকদের জন্য ওই সময়টা ছিল দারুণ।’

দুই তারকার দ্বৈরথের প্রাথমিক যাত্রাটা হয় ২০০৮ সালে, যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে নিজের প্রথম ব্যালন ডি’অর জেতেন সিআরসেভেন। ছাড়িয়ে যান বার্সেলোনার লা মাসিয়া থেকে এসে সিনিয়র দলে আলো ছড়াতে থাকা মেসিকে। এরপর ২০০৯ সালে রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর দুজনের প্রতিযোগিতাটা পুরোদমে শুরু হয়। ২০০৯–২০১৮ পর্যন্ত প্রতিটি মৌসুমেই উভয়ের দেখা হতে থাকে বিশ্বফুটবলের অন্যতম আকর্ষণীয় লড়াই এল ক্লাসিকোতে। এভাবে ইউরোপীয় ক্লাবে থেকে তাদের দ্বৈরথ চলে ১৫ বছর, উভয়ের দখলে যায় ১৩টি ব্যালন ডি’অর।

২০০৯–২০১২ মৌসুমে টানা চার মৌসুমে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন মেসি। লড়াইয়ে সমতা আনতে রোনালদো প্রেস্টিজিয়াস এই পুরস্কার জেতেন ২০১৩–২০১৭ পাঁচ মৌসুমের মধ্যে চারবার। অবশ্য সবমিলিয়ে এই লড়াইয়ে এগিয়েই আছেন মেসি, ব্যালন জিতেছেন ৮ বার। তার প্রতিদ্বন্দ্বী পর্তুগিজ তারকার দখলে সেই সোনালী বল পাঁচবার উঠেছে। লা লিগায় মেসি বার্সেলোনার হয়ে ৬৭২ গোল করেছেন, ভাগিয়েছেন ৬টি গোল্ডেন শ্যু এবং আরও অসংখ্য রেকর্ড। বিপরীতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখনও সর্বকালের সেরা গোলদাতা (১৪০) রোনালদো। তিনবার হয়েছেন উয়েফার সেরা খেলোয়াড়। একসঙ্গে রোনালদো-মেসি কেবল নিজেরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করেননি, ফুটবলীয় মাহাত্ম্যকে নিয়ে গেছেন আরও উঁচুতে।

dhakapost

নিজের দীর্ঘকালের প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো সম্পর্কে মেসি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি আমাদের দুজন এবং ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অনেক ভালো অধ্যায় ছিল। লম্বা সময় ধরে আমরা মাঠের নৈপুণ্যে যা কিছু অর্জন করেছি এর পুরো কৃতিত্বই আমাদের। একটা কথা বলা হয়ে থাকে যে, শীর্ষস্থানে ওঠা সহজ কিন্তু সেই অবস্থান ধরে রাখা কঠিন।’

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

রোনালদোর সঙ্গে দ্বৈরথকে ‘চমৎকার’ আখ্যা দিয়ে যা বললেন মেসি

আপডেট সময় : ০১:৪৩:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

একসঙ্গে জিতেছেন ১৩টি ব্যালন ডি’অর। বলতে গেলে দু’জন একসঙ্গে যখন ইউরোপীয় ক্লাব মাতাচ্ছেন, তখন তাদের ধারেকাছে ছিল না কেউই। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায়ও ফুটবল ভক্তদের কাছে মোটেও আকর্ষণ কমেনি আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি ও পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। বর্তমানে উভয়েই আছেন ইউরোপের আঙিনা পেরিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই ভুবনে। তবে থেমে নেই তাদের দ্বৈরথ ও ‘কে সেরা’র পুরোনো বিতর্ক!

মেসি ও রোনালদো ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তাদের একের পর এক ছাড়িয়ে যাওয়া পারফরম্যান্স দিয়ে দর্শকদের দীর্ঘ সময় ধরে বুঁদ করে রেখেছিলেন। তাদের ব্যক্তিগত এই সেরা হয়ে ওঠার প্রতিযোগিতা ঐতিহাসিকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল দুই স্প্যানিশ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের মাঝেও। অসংখ্য রেকর্ড, ব্যক্তিগত মাইলফলক ও শিরোপা জয়ে উভয়েই গড়েছেন বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। যা কেবলই উন্মাদনা বাড়িয়ে চলেছে রোনালদো ও মেসির ভক্তদের মাঝে।

এখনও দুই মহাতারকার নাম বলতেই মুগ্ধতা ঝরে ফুটবল সংশ্লিষ্টদের চোখে। অবশ্য দুই তারকার মধ্যে কে সেরা সেই বিতর্কেও হরহামেশা জড়াতে দেখা যায় তাদের। তারা নিজেরাও কখনও কখনও সেই উত্তেজনায় ঘি ঢালেন। সম্প্রতি ফ্রান্স সাময়িকীর মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মেসি। সেখানে তিনি কথা বলেছেন রোনালদোর সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা, নিজেদের মতো সময়টা উপভোগ করা এবং পরস্পরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার তাড়না প্রসঙ্গে।

ব্যালন ডি’অরের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত ভিডিওতে বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, ‘এই লড়াই সব সময়ই ছিল। ক্রীড়ার পরিভাষায় এই দ্বৈরথ খুবই চমৎকার। আমরা পরস্পরকে আরও ভালো পারফর্মার হতে ক্রমাগত চাপ দিয়ে গেছি, কারণ দুজনেই ছিলাম চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। সে (রোনালদো) সব সময়ই সবকিছু জিততে চাইতো, একইভাবে আমিও। আমাদের এবং ফুটবল সমর্থকদের জন্য ওই সময়টা ছিল দারুণ।’

দুই তারকার দ্বৈরথের প্রাথমিক যাত্রাটা হয় ২০০৮ সালে, যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে নিজের প্রথম ব্যালন ডি’অর জেতেন সিআরসেভেন। ছাড়িয়ে যান বার্সেলোনার লা মাসিয়া থেকে এসে সিনিয়র দলে আলো ছড়াতে থাকা মেসিকে। এরপর ২০০৯ সালে রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর দুজনের প্রতিযোগিতাটা পুরোদমে শুরু হয়। ২০০৯–২০১৮ পর্যন্ত প্রতিটি মৌসুমেই উভয়ের দেখা হতে থাকে বিশ্বফুটবলের অন্যতম আকর্ষণীয় লড়াই এল ক্লাসিকোতে। এভাবে ইউরোপীয় ক্লাবে থেকে তাদের দ্বৈরথ চলে ১৫ বছর, উভয়ের দখলে যায় ১৩টি ব্যালন ডি’অর।

২০০৯–২০১২ মৌসুমে টানা চার মৌসুমে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন মেসি। লড়াইয়ে সমতা আনতে রোনালদো প্রেস্টিজিয়াস এই পুরস্কার জেতেন ২০১৩–২০১৭ পাঁচ মৌসুমের মধ্যে চারবার। অবশ্য সবমিলিয়ে এই লড়াইয়ে এগিয়েই আছেন মেসি, ব্যালন জিতেছেন ৮ বার। তার প্রতিদ্বন্দ্বী পর্তুগিজ তারকার দখলে সেই সোনালী বল পাঁচবার উঠেছে। লা লিগায় মেসি বার্সেলোনার হয়ে ৬৭২ গোল করেছেন, ভাগিয়েছেন ৬টি গোল্ডেন শ্যু এবং আরও অসংখ্য রেকর্ড। বিপরীতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখনও সর্বকালের সেরা গোলদাতা (১৪০) রোনালদো। তিনবার হয়েছেন উয়েফার সেরা খেলোয়াড়। একসঙ্গে রোনালদো-মেসি কেবল নিজেরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করেননি, ফুটবলীয় মাহাত্ম্যকে নিয়ে গেছেন আরও উঁচুতে।

dhakapost

নিজের দীর্ঘকালের প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো সম্পর্কে মেসি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি আমাদের দুজন এবং ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অনেক ভালো অধ্যায় ছিল। লম্বা সময় ধরে আমরা মাঠের নৈপুণ্যে যা কিছু অর্জন করেছি এর পুরো কৃতিত্বই আমাদের। একটা কথা বলা হয়ে থাকে যে, শীর্ষস্থানে ওঠা সহজ কিন্তু সেই অবস্থান ধরে রাখা কঠিন।’