ঢাকা ০৯:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের দরকার হবে না, আশা পুতিনের

টানা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ এই সময়ে রুশ আগ্রাসন ও ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় হয়েছে হাজারও মানুষের প্রাণহানি। যুদ্ধ শুরুর কয়েক মাসের মাথায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়ার ভূখণ্ড রক্ষার জন্য তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে প্রস্তুত।

তবে এখন তার আশা, ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না। যুদ্ধ শেষ করার মতো রাশিয়ার কাছে যথেষ্ট শক্তি ও সম্পদ আছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রোববার (৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

পুতিন রোববার জানিয়েছেন, ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি আশা করছেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্রের অংশে সাংবাদিক পাভেল জারুবিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। সেখানে পুতিন বলেন, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এখনও এমন অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি।

পুতিন বলেন, “ওরা (পশ্চিমা দেশগুলো) আমাদের উসকানি দিতে চেয়েছিল, আমাদের ভুল করাতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই অস্ত্র ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়নি। আশা করি ভবিষ্যতেও হবে না।”

তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার কাছে যথেষ্ট শক্তি ও সম্পদ আছে যাতে রাশিয়ার “প্রয়োজনীয় ফলাফল” দিয়ে যুদ্ধের শেষ করা যায়। পুতিন আরও বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পুনর্মিলন “অনিবার্য”, যদিও তিনি স্বীকার করেন— এই যুদ্ধের চতুর্থ বছরে এসে দুই দেশই অনেক “বেদনার” অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি পশ্চিমাদের অভিযুক্ত করেন, ২০০০-এর দশকে তারা রাশিয়াকে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্র করেছিল। তার দাবি, পশ্চিমা প্রতিদ্বন্দ্বীরা “চালাকির সঙ্গে এক কথা বলেছে, কিন্তু করেছে অন্য কিছু।”

২০১৪ এবং ২০১৫ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য যে মিনস্ক চুক্তি হয়েছিল, তা নিয়েও পুতিন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাশিয়া চুক্তির প্রতি আস্থা রেখেছিল, কিন্তু পরে “প্রতারণার শিকার” হয়।

পুতিনের মতে, পশ্চিমারা ওই চুক্তিগুলোকে কৌশলগত বিরতি হিসেবে ব্যবহার করেছে যাতে ইউক্রেনকে “অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করা” এবং রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা যায়। তিনি বলেন, “এটিও আমাদের জন্য এক শিক্ষা। ভবিষ্যতে অবশ্যই এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।”

পুতিন দাবি করেন, ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ “বাধ্যতামূলক” ছিল। তার ভাষায়, অন্য কোনও পদক্ষেপ মানে হতো “সেখানে থাকা মানুষদের ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার জন্য ছেড়ে দেওয়া।”

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের দরকার হবে না, আশা পুতিনের

আপডেট সময় : ১২:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

টানা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ এই সময়ে রুশ আগ্রাসন ও ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় হয়েছে হাজারও মানুষের প্রাণহানি। যুদ্ধ শুরুর কয়েক মাসের মাথায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়ার ভূখণ্ড রক্ষার জন্য তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে প্রস্তুত।

তবে এখন তার আশা, ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না। যুদ্ধ শেষ করার মতো রাশিয়ার কাছে যথেষ্ট শক্তি ও সম্পদ আছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রোববার (৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

পুতিন রোববার জানিয়েছেন, ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি আশা করছেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্রের অংশে সাংবাদিক পাভেল জারুবিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। সেখানে পুতিন বলেন, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এখনও এমন অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি।

পুতিন বলেন, “ওরা (পশ্চিমা দেশগুলো) আমাদের উসকানি দিতে চেয়েছিল, আমাদের ভুল করাতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই অস্ত্র ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়নি। আশা করি ভবিষ্যতেও হবে না।”

তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার কাছে যথেষ্ট শক্তি ও সম্পদ আছে যাতে রাশিয়ার “প্রয়োজনীয় ফলাফল” দিয়ে যুদ্ধের শেষ করা যায়। পুতিন আরও বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পুনর্মিলন “অনিবার্য”, যদিও তিনি স্বীকার করেন— এই যুদ্ধের চতুর্থ বছরে এসে দুই দেশই অনেক “বেদনার” অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি পশ্চিমাদের অভিযুক্ত করেন, ২০০০-এর দশকে তারা রাশিয়াকে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্র করেছিল। তার দাবি, পশ্চিমা প্রতিদ্বন্দ্বীরা “চালাকির সঙ্গে এক কথা বলেছে, কিন্তু করেছে অন্য কিছু।”

২০১৪ এবং ২০১৫ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য যে মিনস্ক চুক্তি হয়েছিল, তা নিয়েও পুতিন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাশিয়া চুক্তির প্রতি আস্থা রেখেছিল, কিন্তু পরে “প্রতারণার শিকার” হয়।

পুতিনের মতে, পশ্চিমারা ওই চুক্তিগুলোকে কৌশলগত বিরতি হিসেবে ব্যবহার করেছে যাতে ইউক্রেনকে “অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করা” এবং রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা যায়। তিনি বলেন, “এটিও আমাদের জন্য এক শিক্ষা। ভবিষ্যতে অবশ্যই এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।”

পুতিন দাবি করেন, ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ “বাধ্যতামূলক” ছিল। তার ভাষায়, অন্য কোনও পদক্ষেপ মানে হতো “সেখানে থাকা মানুষদের ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার জন্য ছেড়ে দেওয়া।”