মিয়ানমারে সংঘটিত ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩,১৪৫ জনে পৌঁছেছে, আহত হয়েছেন ৪,৫৮৯ জন এবং ২২১ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
গত ২৮ মার্চ ২০২৫ শুক্রবার, এই ভয়াবহ দুর্যোগে মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে, বিশেষ করে মান্দালয় এবং সাগাইং শহরে। ভূমিকম্পের ফলে হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধসে পড়েছে, যা উদ্ধার কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। এই সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, ১৭টিরও বেশি দেশ এবং ১,৫৫০ জনেরও বেশি আন্তর্জাতিক উদ্ধারকর্মী মিয়ানমারে সহায়তা প্রদান করছে। নিচে প্রধান সহায়তাকারী দেশসমূহ এবং তাদের প্রদত্ত সহায়তার বিবরণ প্রদান করা হলো:
-যুক্তরাজ্যঃ জরুরি সহায়তা হিসেবে ১০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে, যা খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং আশ্রয় সামগ্রীতে ব্যয় করা হবে।
-ভারতঃ ‘অপারেশন ব্রহ্মা’ নামে একটি মানবিক সহায়তা মিশন পরিচালনা করে ১৫ টন ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তাঁবু, কম্বল, স্লিপিং ব্যাগ, রেডি-টু-ইট খাবার, পানি পরিশোধক, সৌর ল্যাম্প, জেনারেটর সেট এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ। এছাড়াও, একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ১২০ জনের একটি মেডিকেল টিম প্রেরণ করেছে।
– চীনঃ ১৩.৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের জরুরি সহায়তা প্রদান করেছে এবং ১৩৫ জন উদ্ধারকর্মী ও বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছে।
-রাশিয়াঃ ১২০ জন উদ্ধারকর্মী এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণ করেছে।
-জাপানঃ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে ৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদান করেছে এবং একটি মেডিকেল টিম ও জরুরি সরঞ্জাম পাঠিয়েছে।
-বাংলাদেশঃ দুটি মিশনের মাধ্যমে জরুরি ওষুধ, ত্রাণ সামগ্রী, উদ্ধার ও মেডিকেল টিম প্রেরণ করেছে। দ্বিতীয় মিশনে ৮ টন শুকনো খাবার, ২.৫ টন পানি, ৪ টন ওষুধ, ১ টন হাইজিন পণ্য এবং ১.৫ টন ত্রাণ তাঁবু পাঠানো হয়েছে।
– অস্ট্রেলিয়াঃ প্রাথমিকভাবে ২ মিলিয়ন ডলার এবং পরবর্তীতে আরও ৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদান করেছে, মোট ৯ মিলিয়ন ডলার।
– মালয়েশিয়াঃ উদ্ধার দল এবং ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণ করেছে।
– সিঙ্গাপুরঃ উদ্ধার দল এবং ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণ করেছে।
– থাইল্যান্ডঃ উদ্ধার দল এবং ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণ করেছে।
– আয়ারল্যান্ড: ৬.৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
– এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB)**: ৩ মিলিয়ন ডলারের একটি অনুদান প্রস্তুত করছে, যা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (WFP) মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ ও নগদ সহায়তা হিসেবে প্রদান করা হবে
এই আন্তর্জাতিক সহায়তা মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে, দেশটির চলমান গৃহযুদ্ধ ও অবকাঠামোগত ক্ষতির কারণে উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রমে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হচ্ছে।