প্রবাসীদের পাঠানো আয় বাড়ার ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে।
২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫৪৪০ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন বা ২ হাজার ৫৪৪ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২০২৯৬ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন বা ২ হাজার ২৯ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে রিজার্ভের এ বৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে আমদানি ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
চলতি মার্চ মাসে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ২৯৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) এর পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহের রেকর্ড।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহে এই ঊর্ধ্বগতির মূল কারণ হলো বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, সরকারের রেমিট্যান্স প্রণোদনা এবং অবৈধ হুন্ডি লেনদেন কমানো। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর হারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ্য, নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে প্রকৃত বা নিট রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নিট রিজার্ভের এ পরিমাণ স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, রিজার্ভ বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে তা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে। তবে ভবিষ্যতে রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় আরও কার্যকর নীতি গ্রহণ করা দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।