পিরোজপুরের নেছারাবাদে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এক অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেওয়ায় বিএনপি নেতার তোপের মুখে পড়েছেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. কাজী সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (২৬ মার্চ) সরকারি স্বরূপকাঠী পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি)সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. সাখাওয়াত হোসেন তার বক্তব্যের শেষ অংশে ‘‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’’ স্লোগান দেন। এ সময় নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সদস্য ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. গোলাম মোস্তফা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান এবং প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করেন। পরে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীও এতে সমর্থন জানান।
এ ঘটনার সূত্রপাত হয় এর আগের দিন, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায়। ওই সভায় বক্তব্য রাখার সময়ও মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত হোসেন ‘‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’’ স্লোগান দেন। এতে কয়েকজন আপত্তি জানালে তিনি অনুতপ্ত হন। তবে এরই জেরে পরদিন স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা মোস্তফার তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েন তিনি।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘‘আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধকালীন সময়ে যে স্লোগান দিয়ে লড়াই করেছি, সেই ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলেছি। গতকাল (২৫ মার্চ) আমি এটি বলার পর কয়েকজন আপত্তি জানিয়েছিলেন। আজ (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির এক নেতা আবারো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তবে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।’’
তবে বিএনপি নেতা মো. গোলাম মোস্তফা দাবি করেছেন, ‘‘১০ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে আদালতের আপিল বিভাগ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান স্থগিত করেছেন। কিন্তু ২৫ মার্চের আলোচনা সভায় তিনি তা বলেছিলেন, আমি তখনই প্রতিবাদ করেছিলাম। তবে ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে তিনি পুনরায় এ স্লোগান দেওয়ায় আমি শুধু প্রতিবাদ করেছি, কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।’’
এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া হয়নি। তবে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাখাওয়াত হোসেন ‘জয় বাংলা’ বলেছিলেন, তখন কিছু লোক আপত্তি জানান। তবে তিনি সঙ্গে সঙ্গেই ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন।’’ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।