ভারতের ১৯৮০-এর দশকের অন্যতম জনপ্রিয় বলিউড অভিনেত্রী মন্দাকিনী, যিনি ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রাম তেরি গঙ্গা মাইলি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেন, দীর্ঘ বিরতির পর আবারও বিনোদন জগতে ফিরে এসেছেন। দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র জগত থেকে দূরে থাকার পর, সম্প্রতি তিনি তার ছেলে রাবিল ঠাকুরের সঙ্গে একটি মিউজিক ভিডিওতে উপস্থিত হয়েছেন, যা তার ভক্তদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
মন্দাকিনী তার প্রথম ছবি দিয়েই বলিউডে রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠেন। ১৯৮৫ সালে রাজ কাপুরের পরিচালনায় ‘রাম তেরি গঙ্গা মাইলি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ছবিতে তার সৌন্দর্য ও অভিনয় দক্ষতা দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল। এরপর তিনি ‘ড্যান্স ড্যান্স’, ‘লাড়াই’, ‘কাহান হ্যায় কানুন’, ‘নাগ নাগিন’, ‘প্যায়ার কে নাম কুরবানি’, ‘প্যায়ার কারকে দেখো’-এর মতো বেশ কিছু সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৬ সালে ‘জর্দার’ ছবিতে গোবিন্দ, আদিত্য পাঞ্চোলি এবং নীলম কোঠারির সঙ্গে অভিনয় করার পর, তিনি ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নেওয়ার পর মন্দাকিনী ব্যক্তিগত জীবনে মনোযোগী হন এবং চিকিৎসক ও তিব্বতি যোগগুরু ড. কাগ্যুর টি রিনপোচেকে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে—ছেলে রাবিল ঠাকুর এবং মেয়ে রাবজে ইনায়া ঠাকুর।
২৬ বছর পর, মন্দাকিনী আবার বিনোদন জগতে ফিরে এসেছেন এবং আলোচনায় এসেছেন। সম্প্রতি তিনি তার ছেলে রাবিল ঠাকুরের সঙ্গে একটি মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন। এই ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় এবং ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করে। তার এই প্রত্যাবর্তন অনেকের কাছেই নস্টালজিয়ার মুহূর্ত এনে দিয়েছে, বিশেষত ৮০ ও ৯০-এর দশকের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য।
মন্দাকিনীর মেয়ে রাবজে ইনায়া ঠাকুর বর্তমানে পড়াশোনায় ব্যস্ত রয়েছেন। তবে চেহারায় তিনি তার মায়ের মতো হয়ে উঠেছেন, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তরা লক্ষ্য করেছেন। প্রায়ই তাকে তার মা, শ্যালিকা বুশরা এবং ভাই রাবিলের সঙ্গে ছবিতে দেখা যায়। মন্দাকিনীর পুত্রবধূ বুশরা ঠাকুর চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত এবং একজন প্রযোজক হিসেবে নেটফ্লিক্সের জন্য কন্টেন্ট তৈরি করেন। বুশরা তার কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ছবি ও তথ্য ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন, যা তার পেশাগত জীবন সম্পর্কে ধারণা দেয়।
মন্দাকিনী তার নতুন মিউজিক ভিডিওতে ফিরে আসার পর থেকেই বলিউডে তার পুনরাগমনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ৮০ ও ৯০-এর দশকের নায়কদের মতো তিনিও ওয়েব সিরিজ বা ফিল্মের মাধ্যমে আবার অভিনয় জগতে ফিরতে পারেন। যদিও তিনি এখনো কোনো বড় বাজেটের সিনেমায় কাজ করার ঘোষণা দেননি, তবে তার সাম্প্রতিক উপস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ভবিষ্যতে তাকে হয়তো নতুন চরিত্রে দেখা যেতে পারে।
মন্দাকিনীর প্রত্যাবর্তন তার ভক্তদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তার অভিনীত চলচ্চিত্রের নস্টালজিক মুহূর্ত শেয়ার করছেন এবং তার ভবিষ্যৎ প্রকল্প নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। অনেকের মতে, দীর্ঘদিন পরেও তার সৌন্দর্য ও ক্যারিশমা আগের মতোই রয়ে গেছে।
বলিউডের স্বর্ণযুগের জনপ্রিয় নায়িকা মন্দাকিনীর এই প্রত্যাবর্তন নিঃসন্দেহে তার ভক্তদের জন্য আনন্দের খবর। যদিও তিনি দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র থেকে দূরে ছিলেন, তবে নতুন মিউজিক ভিডিও এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সক্রিয় উপস্থিতি তাকে আবার আলোচনায় নিয়ে এসেছে। বলিউডে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, সেটাই এখন দেখার বিষয়।