জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) পারফিউম ব্যবসার আড়ালে হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগে আল হারামাইন পারফিউমসের মালিক মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান নাসিরের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে।
গত ২২ জানুয়ারি সিআইসি মাহতাবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে। এ তালিকায় তার ভাই, ছেলে, ভাতিজা এবং আল হারামাইন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালকও রয়েছেন।
সিআইসি সূত্রে জানা গেছে, মাহতাবুর রহমানের ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক বিশ্বের ৮৬টি দেশে বিস্তৃত, যা হুন্ডি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে।
তদন্তের অংশ হিসেবে সিআইসি সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) গিয়ে মাহতাবুর রহমানের সম্পদ ও অর্থ পাচারের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এছাড়া, সিলেটে তার বাড়িতে দুই দফা তল্লাশি চালিয়ে ১০৪টি সম্পত্তির দলিলসহ অন্যান্য নথি জব্দ করা হয়েছে।
এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের মহাপরিচালক আহসান হাবিব জানিয়েছেন, তদন্ত কার্যক্রমের ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। জব্দকৃত নথিপত্র পর্যালোচনা ও তথ্যের সত্যতা নিরূপণের কাজ চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত হলে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২১ সালে আল হারামাইন পারফিউমস প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশ একটি সংবাদ প্রতিবেদনকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
এনবিআর ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) বিভিন্ন সংস্থা মাহতাবুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। ২০২৪ সালের ১২ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক সুশাসনের ঘাটতি ও অপরাধের প্রমাণ পাওয়ায় এনআরবি ব্যাংক পিএলসির পর্ষদ ভেঙে দেয়। ২০১৬ সাল থেকে টানা নয় বছরের বেশি সময় ধরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন মাহতাবুর রহমান।
মাহতাবুর রহমান তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, তার আয়ের প্রধান উৎস আল হারামাইন পারফিউমস, যা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। তিনি কখনো হুন্ডির ব্যবসা করেননি এবং অবৈধ কোনো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নন।
এনবিআরের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।