ঢাকা ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
যুব মহিলালীগ নেত্রী লুনা হোসেন এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে মানববন্ধন ট্রাম্পের ‘শুল্ক বোমা’র আগে চীনের রপ্তানি ১২.৪% বৃদ্ধি ভারত থেকে ইউনুসকে সতর্ক বার্তা শেখ হাসিনার বেকার সাংবাদিক রাশেদুলের নিগ্রহের শিকার গৌতম আবারও ৮ লক্ষ টাকার ভারতীয় শাড়ী ও থ্রিপিচ জব্দ করেছে বংশাল থানা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেলেন বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ১৮ রানে চেন্নাই কে হারালো পাঞ্জাব এসএ টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। মাগুরার আছিয়া ধর্ষণ: ডিএনএ রিপোর্টে হিটু শেখের জড়িত থাকার প্রমাণ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন কোরিয়ার বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল
দেশজুড়ে ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে

জাবি শিক্ষার্থীদের ধর্ষণবিরোধী মশাল মিছিল; ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

সারাদেশে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৯ মার্চ) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় আধঘণ্টা ধরে অবরোধ চলার পর রাত সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি

এর আগে রাত ১০টায় ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা বটতলা থেকে একটি মশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান নিয়ে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি

বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং ধর্ষণের ঘটনার বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “যদি তিনি দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন, তবে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা আর কোনো আশ্বাস শুনতে চাই না, কার্যকর ব্যবস্থা চাই।”

সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও আন্দোলনের পটভূমি

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যা জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, নির্যাতনের শিকার নারীদের ন্যায়বিচার না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। এ অবস্থায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে এসে ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেন।

পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

বিক্ষোভের সময় মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) তাপস কুমার দাস বলেন, “শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি জানিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। তবে তাদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি

বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা জানান, ধর্ষণের শাস্তি কঠোরভাবে কার্যকর না হলে তারা আরও বড় আন্দোলনে নামবেন। এক শিক্ষার্থী বলেন, “নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যদি রাস্তায় না নামি, তবে এই সমাজ ঘুমিয়ে থাকবে। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাও বিক্ষোভে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

যুব মহিলালীগ নেত্রী লুনা হোসেন এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে মানববন্ধন

দেশজুড়ে ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে

জাবি শিক্ষার্থীদের ধর্ষণবিরোধী মশাল মিছিল; ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

আপডেট সময় : ০১:৩৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

সারাদেশে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৯ মার্চ) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় আধঘণ্টা ধরে অবরোধ চলার পর রাত সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি

এর আগে রাত ১০টায় ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা বটতলা থেকে একটি মশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান নিয়ে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি

বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং ধর্ষণের ঘটনার বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “যদি তিনি দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন, তবে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা আর কোনো আশ্বাস শুনতে চাই না, কার্যকর ব্যবস্থা চাই।”

সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও আন্দোলনের পটভূমি

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যা জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, নির্যাতনের শিকার নারীদের ন্যায়বিচার না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। এ অবস্থায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে এসে ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেন।

পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

বিক্ষোভের সময় মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) তাপস কুমার দাস বলেন, “শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি জানিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। তবে তাদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি

বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা জানান, ধর্ষণের শাস্তি কঠোরভাবে কার্যকর না হলে তারা আরও বড় আন্দোলনে নামবেন। এক শিক্ষার্থী বলেন, “নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যদি রাস্তায় না নামি, তবে এই সমাজ ঘুমিয়ে থাকবে। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাও বিক্ষোভে একাত্মতা প্রকাশ করেন।