বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিয়মিত ই-মেইল আদান-প্রদান করেন অনেকেই, আর এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মটি হল গুগলের জিমেইল। বিনামূল্যে এই সেবা ব্যবহার করতে পারে যে কেউ, তবে জিমেইলের বেশ কিছু অসাধারণ ফিচার রয়েছে যা অনেকের কাছেই অজানা। চলুন, জেনে নেওয়া যাক জিমেইল-এর কিছু বিশেষ ফিচার।
১. ইন্টারনেট ছাড়া জিমেইল ব্যবহার
ব্যবহারকারীরা চাইলে ইন্টারনেট ছাড়াই জিমেইল ব্যবহার করতে পারেন। এই সুবিধা ব্যবহার করতে হলে “অফলাইন অ্যাক্সেস মোড” চালু করতে হবে। এটি গুগল ক্রোম ব্রাউজারে কাজ করে এবং অফলাইনে ই-মেইল পাঠানো, অনুসন্ধান এবং প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হয়।
অফলাইন অ্যাক্সেস চালু করার পদ্ধতি:
- প্রথমে জিমেইলে প্রবেশ করুন।
- “সেটিংস” আইকনে ক্লিক করে “See all settings” অপশনে যান।
- তারপর “Offline” ট্যাবে ক্লিক করে অফলাইন মোড চালু করুন।
২. অ্যাডভান্সড সার্চ
অনেক সময় ই-মেইল খুঁজতে সমস্যা হয়। তবে “অ্যাডভান্স সার্চ” ফিচারের মাধ্যমে আপনি সহজেই কাঙ্ক্ষিত ই-মেইল খুঁজে পাবেন। আপনি সার্চ বক্সে ই-মেইল অ্যাড্রেস লিখলে, সেখানে বিভিন্ন সার্চ ফিল্টার যেমন অ্যাটাচমেন্ট, তারিখ ইত্যাদি ব্যবহার করে ই-মেইল অনুসন্ধান করতে পারেন।
৩. স্মার্ট কম্পোজ
“স্মার্ট কম্পোজ” ফিচার ব্যবহার করে দ্রুত ই-মেইল লেখা যায়। এটি মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং পরামর্শ দেয়। এটি গুগল অ্যাকাউন্ট লেভেল সেটিংস হিসেবে কাজ করে, এবং অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করলে সেটিংসগুলো কার্যকর হয়। এটি চালু করার জন্য:
- জিমেইলে গিয়ে “সেটিংস” আইকনে ক্লিক করুন।
- “See all settings” এবং “General” অপশনে গিয়ে “Smart Compose” চালু করুন।
৪. কনফিডেনশিয়াল মোড
জিমেইলের “কনফিডেনশিয়াল মোড” ব্যবহার করলে ই-মেইলটি নির্দিষ্ট সময় পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিলিট হয়ে যায়, যা নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি স্ক্রিনশট নেওয়া, ডাউনলোড, প্রিন্ট বা ফরোয়ার্ড করা থেকেও রোধ করে। এটি চালু করার জন্য:
- ই-মেইল লিখতে গিয়ে “প্যাডলক ক্লক আইকনে” ক্লিক করে “Confidential Mode” চালু করুন।
- তারপর “Set expiration” থেকে নির্দিষ্ট তারিখ বেছে ই-মেইল পাঠিয়ে দিন।
৫. সোয়াইপ সুবিধা
জিমেইলের স্মার্টফোন অ্যাপে “সোয়াইপ” করে ই-মেইল আর্কাইভ, ডিলিট, রিড বা আনরিড করা যায়। এটি ব্যবহারকারীকে তাদের পছন্দমতো অপশন কাস্টমাইজ করার সুযোগ দেয়। এটি কাস্টমাইজ করার জন্য:
- অ্যাপের সেটিংসে প্রবেশ করুন।
- “General Settings” থেকে “Email Swipe Actions”-এ গিয়ে রাইট সোয়াইপ ও লেফট সোয়াইপের জন্য পছন্দমতো অপশন সিলেক্ট করুন।
৬. জিমেইল ফিচারগুলোর একত্রিত সুবিধা
জিমেইল একাধিক সেবা একত্রে ব্যবহার করার সুবিধা দেয়। যেমন গুগল ড্রাইভ, গুগল ক্যালেন্ডার, গুগল ফটো, গুগল কিপ ইত্যাদির সঙ্গে একীভূত হওয়া। ফলে কাজের জন্য দ্রুত পেতে পারেন প্রয়োজনীয় সব কিছু।
৭. ফিল্টার এবং লেবেল ব্যবস্থাপনা
জিমেইলের ফিল্টার ও লেবেল ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের মেইলগুলো আরও সংগঠিত রাখতে পারে। আপনি নির্দিষ্ট কন্ডিশন দিয়ে মেইল ফিল্টার করতে পারেন এবং এই মেইলগুলো নির্দিষ্ট লেবেল দিয়ে চিহ্নিত করতে পারবেন।
জিমেইল, শুধুমাত্র একটি ই-মেইল সেবা নয়, এটি বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর বিভিন্ন ফিচার আপনাকে আপনার ই-মেইল ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত এবং নিরাপদ করতে সাহায্য করবে।