ঢাকা ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা কারও চোখ রাঙানিকে পরোয়া করি না : রফিকুল ইসলাম খান

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, জামায়াতে ইসলাম দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায়। কিন্তু এই পরিবেশ বিঘ্নিত করতে কেউ কেউ চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ মনে করছেন আওয়ামী লীগ চলে গেছে, ওনারা দেশের মালিক হয়ে গেছে। এজন্য সবাইকে মনে রাখতে হবে, হাসিনার মতো মানুষকে এই দেশের মানুষ বিদায় করেছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই—আমাদেরকে কেউ চোখ রাঙিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবেন না, আমরা কারও চোখ রাঙানিকে পরোয়া করি না।

শনিবার (১৭ মে) দুপুরে পাবনা সুজানগর উপজেলা ও বেড়া জামায়াতের আয়োজিত অনুষ্ঠানে সুজানগর অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টার ও পৌর হাট মাঠের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের দুই মন্ত্রীর এক টাকাও দুর্নীতি পায়নি। আমাদের ইতিহাস সৎ নেতাকর্মী তৈরির। নির্দোষ এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তি, দলের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দিতে হবে। আগে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে, এরপর জাতীয় নির্বাচন। কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।

তিনি বলেন, আমরা সুখী-সমৃদ্ধিশালী আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়তে কাজ করছি। এ জন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। শহীদ আমিরে জামায়াত মতিউর রহমান নিজামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির সব নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদিকেও কারাগারে বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সব নেতাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এদের কোনো ক্ষমা করা চলবে না। এরা অসংখ্য মানুষকে বছরের পর বছর আয়নাঘরে গুম করে রেখেছিল। দেশের শাসনব্যবস্থা নির্বাচন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বললেই গুমের শিকার হতে হতো। এখনো অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিগত পতিত সরকার ভারতীয় দালাল ঘসেটি বেগম হাসিনা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। হাসিনার আমলের ভুয়া নির্বাচন কমিশনারদের গ্রেপ্তার করতে হবে। বিচারপতি খাইরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে হবে। সব হত্যাকাণ্ডের দায় তাকে নিতে হবে।

উত্তরবঙ্গের বর্ষীয়ান এই নেতা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জুলাই বিপ্লবে নিহতের পরিবারের একজন করে যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরি দিতে হবে। আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত এদের বিচার দ্রুত করতে হবে। শুধু শেখ হাসিনাকে বিচার করলে হবে না, একসঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে বিচার করতে হবে। বিদেশে পাচারের টাকা ফেরত আনতে হবে।

সুজানগর উপজেলা জামায়াতের আমির, পাবনা-২ (সুজানগর ও বেড়ার আংশিক) আসনের এমপি পদপ্রার্থী জননেতা অধ্যাপক কে এম হেসাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো. ইকবাল হোসাইন, জামায়াতের ইসলামীর সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ব্যরিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, পাবনা- ৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আলী আসগর, পাবনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফ্ফার খান, সহকারী সেক্রেটারি আবু সালেহ মো. আব্দুল্লাহ, এসএম সোহেল, পাবনা সদর জামায়াতের আমির আব্দুর রব, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পাবনার সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাবনা শহর শাখার সভাপতি ফিরোজ হোসাইন, জেলা শাখার সভাপতি ইসরাইল হোসাইন শান্ত। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য শেষে পাবনার পাঁচটি আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন রফিকুল ইসলাম খান। পরে তাদের নিয়ে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অনুষ্ঠানস্থল থেকে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলার সামনে গিয়ে শেষ হয়।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, বেড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আতাউর রহমান সরকার ও সুজানগর জামায়াতের সেক্রেটারি টুটুল হোসাইন বিশ্বাস।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা কারও চোখ রাঙানিকে পরোয়া করি না : রফিকুল ইসলাম খান

আপডেট সময় : ০৬:৪৮:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, জামায়াতে ইসলাম দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায়। কিন্তু এই পরিবেশ বিঘ্নিত করতে কেউ কেউ চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ মনে করছেন আওয়ামী লীগ চলে গেছে, ওনারা দেশের মালিক হয়ে গেছে। এজন্য সবাইকে মনে রাখতে হবে, হাসিনার মতো মানুষকে এই দেশের মানুষ বিদায় করেছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই—আমাদেরকে কেউ চোখ রাঙিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবেন না, আমরা কারও চোখ রাঙানিকে পরোয়া করি না।

শনিবার (১৭ মে) দুপুরে পাবনা সুজানগর উপজেলা ও বেড়া জামায়াতের আয়োজিত অনুষ্ঠানে সুজানগর অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টার ও পৌর হাট মাঠের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের দুই মন্ত্রীর এক টাকাও দুর্নীতি পায়নি। আমাদের ইতিহাস সৎ নেতাকর্মী তৈরির। নির্দোষ এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তি, দলের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দিতে হবে। আগে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে, এরপর জাতীয় নির্বাচন। কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।

তিনি বলেন, আমরা সুখী-সমৃদ্ধিশালী আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়তে কাজ করছি। এ জন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। শহীদ আমিরে জামায়াত মতিউর রহমান নিজামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির সব নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদিকেও কারাগারে বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সব নেতাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এদের কোনো ক্ষমা করা চলবে না। এরা অসংখ্য মানুষকে বছরের পর বছর আয়নাঘরে গুম করে রেখেছিল। দেশের শাসনব্যবস্থা নির্বাচন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বললেই গুমের শিকার হতে হতো। এখনো অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিগত পতিত সরকার ভারতীয় দালাল ঘসেটি বেগম হাসিনা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। হাসিনার আমলের ভুয়া নির্বাচন কমিশনারদের গ্রেপ্তার করতে হবে। বিচারপতি খাইরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে হবে। সব হত্যাকাণ্ডের দায় তাকে নিতে হবে।

উত্তরবঙ্গের বর্ষীয়ান এই নেতা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জুলাই বিপ্লবে নিহতের পরিবারের একজন করে যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরি দিতে হবে। আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত এদের বিচার দ্রুত করতে হবে। শুধু শেখ হাসিনাকে বিচার করলে হবে না, একসঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে বিচার করতে হবে। বিদেশে পাচারের টাকা ফেরত আনতে হবে।

সুজানগর উপজেলা জামায়াতের আমির, পাবনা-২ (সুজানগর ও বেড়ার আংশিক) আসনের এমপি পদপ্রার্থী জননেতা অধ্যাপক কে এম হেসাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো. ইকবাল হোসাইন, জামায়াতের ইসলামীর সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ব্যরিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, পাবনা- ৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আলী আসগর, পাবনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফ্ফার খান, সহকারী সেক্রেটারি আবু সালেহ মো. আব্দুল্লাহ, এসএম সোহেল, পাবনা সদর জামায়াতের আমির আব্দুর রব, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পাবনার সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাবনা শহর শাখার সভাপতি ফিরোজ হোসাইন, জেলা শাখার সভাপতি ইসরাইল হোসাইন শান্ত। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য শেষে পাবনার পাঁচটি আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন রফিকুল ইসলাম খান। পরে তাদের নিয়ে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অনুষ্ঠানস্থল থেকে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলার সামনে গিয়ে শেষ হয়।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, বেড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আতাউর রহমান সরকার ও সুজানগর জামায়াতের সেক্রেটারি টুটুল হোসাইন বিশ্বাস।