সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব মহা অষ্টমী, বাসন্তী পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা লাখো পুণ্যার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে। এসব উৎসবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়মিত টহল, তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ধর্মীয় উৎসবে মেতে উঠেছেন দেশ-বিদেশ থেকে আগত লাখো পুণ্যার্থী। মহা অষ্টমী পুণ্যস্নান উপলক্ষে এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে চলবে দুই দিনব্যাপী।
আগামীকাল ৬ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত চলা এই উৎসবে ১৯টি স্নানঘাটে পুণ্যার্থীদের ভিড় লক্ষ করা যাবে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে হাজারো পুণ্যার্থী এই পবিত্র স্নানে অংশ নিচ্ছেন।
এছাড়াও, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অনুষ্ঠিত অষ্টমী স্নানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। এসব আয়োজন নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সার্বক্ষণিক সশস্ত্র টহল ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ধর্মীয় এই উৎসবকে ঘিরে ট্রাফিক কন্ট্রোল পোস্ট ও চেকপোস্টের মাধ্যমে যানবাহন চলাচল ব্যবস্থাপনায় সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা প্রশংসনীয়।
এদিকে, দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে মহা অষ্টমী ও বাসন্তী পূজা যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর, কক্সবাজারের রামু, টাঙ্গাইলের নাগরপুর, গারাইল ও ভুঞাপুর উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর তীর, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী মন্দির, ঝালকাঠির নলছিটির কোনাবাড়ি ঠাকুরবাড়ি মন্দির, কুমিল্লা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন মণ্ডপ এবং ঢাকার রায়েরবাজার দুর্গা মন্দিরে বিপুলসংখ্যক পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে ধর্মীয় আয়োজনগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
সেনাবাহিনী প্রতিটি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি পূজা কমিটি ও পুরোহিতদের সঙ্গে সমন্বয় সভার আয়োজন করেছে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সবার মাঝে আস্থা ও নিরাপত্তার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ধর্মীয় সম্প্রীতি ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এবারের উৎসবেও যে পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছে, তা প্রশংসিত হয়েছে পুণ্যার্থীদের পক্ষ থেকেও। ভবিষ্যতেও দেশের যে কোনো ধর্মীয় বা জাতীয় উৎসবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত থাকবে—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।