ঢাকা ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
যুব মহিলালীগ নেত্রী লুনা হোসেন এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে মানববন্ধন ট্রাম্পের ‘শুল্ক বোমা’র আগে চীনের রপ্তানি ১২.৪% বৃদ্ধি ভারত থেকে ইউনুসকে সতর্ক বার্তা শেখ হাসিনার বেকার সাংবাদিক রাশেদুলের নিগ্রহের শিকার গৌতম আবারও ৮ লক্ষ টাকার ভারতীয় শাড়ী ও থ্রিপিচ জব্দ করেছে বংশাল থানা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেলেন বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ১৮ রানে চেন্নাই কে হারালো পাঞ্জাব এসএ টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। মাগুরার আছিয়া ধর্ষণ: ডিএনএ রিপোর্টে হিটু শেখের জড়িত থাকার প্রমাণ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন কোরিয়ার বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল
দারিদ্রতা, বেকারত্ব ও কার্বণ নির্গমনহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়

তিনটি শূন্যের বিশ্ব গড়তে চায় বাংলাদেশঃ ড. মুহাম্মদ ইউনূস

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৩:৪২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নির্গমন—এই তিনটি শূন্যের ভিত্তিতে একটি নতুন বিশ্বের স্বপ্ন দেখছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক (বিমসটেক: বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিমসটেক অঞ্চল বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল। অনেকেই এই বিশাল জনসংখ্যাকে সমস্যা হিসেবে দেখেন, কিন্তু সঠিক নীতি ও উদ্যোগ গ্রহণ করলে এই জনশক্তিই সবচেয়ে বড় সম্পদে পরিণত হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক সহযোগিতার পক্ষে। আমরা এমন একটি অঞ্চল গড়তে চাই যেখানে সব দেশ সমতার ভিত্তিতে পারস্পরিক স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করবে।”

লিখিত বক্তব্যে ড. ইউনূস জ্বালানি নিরাপত্তাকে বিআইএমএসটিইসি অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য এবং জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করার বিকল্প নেই। ২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত বিআইএমএসটিইসি গ্রিড সংযোগ চুক্তি এ খাতে সহযোগিতার জন্য একটি মাইলফলক।”

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “২০০৪ সালে স্বাক্ষরিত বিআইএমএসটিইসি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়ন দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে, যাতে অঞ্চলটি আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।”

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “এই সমস্যা সমাধান না হলে পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিমসটেক শান্তিপূর্ণ সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।”

বিমসটেক গঠনের প্রায় ২৮ বছর পার হলেও এর বাস্তব প্রভাব এখনও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে তেমনভাবে দৃশ্যমান হয়নি বলে উল্লেখ করেন ইউনূস। তিনি বলেন, “এখন সময় এসেছে নতুন কৌশলের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যকারিতা বাড়ানোর।”

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের জনগণ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু গত পনেরো বছরে বিশেষ করে যুবসমাজ তাদের অধিকার সংকুচিত হতে দেখেছে। রাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে অবক্ষয় দেখা দিয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “একটি নৃশংস স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে প্রায় ২ হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যাদের মধ্যে ১১৮ জন শিশু।”

সবশেষে ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ তাদের ইতিহাসে এক নবজাগরণ প্রত্যক্ষ করেছে। এই নবযাত্রায় আমাদের সবার উচিত সহযোগিতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়া।”

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

যুব মহিলালীগ নেত্রী লুনা হোসেন এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে মানববন্ধন

দারিদ্রতা, বেকারত্ব ও কার্বণ নির্গমনহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়

তিনটি শূন্যের বিশ্ব গড়তে চায় বাংলাদেশঃ ড. মুহাম্মদ ইউনূস

আপডেট সময় : ০৩:৪২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশ শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নির্গমন—এই তিনটি শূন্যের ভিত্তিতে একটি নতুন বিশ্বের স্বপ্ন দেখছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক (বিমসটেক: বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিমসটেক অঞ্চল বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল। অনেকেই এই বিশাল জনসংখ্যাকে সমস্যা হিসেবে দেখেন, কিন্তু সঠিক নীতি ও উদ্যোগ গ্রহণ করলে এই জনশক্তিই সবচেয়ে বড় সম্পদে পরিণত হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক সহযোগিতার পক্ষে। আমরা এমন একটি অঞ্চল গড়তে চাই যেখানে সব দেশ সমতার ভিত্তিতে পারস্পরিক স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করবে।”

লিখিত বক্তব্যে ড. ইউনূস জ্বালানি নিরাপত্তাকে বিআইএমএসটিইসি অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য এবং জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করার বিকল্প নেই। ২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত বিআইএমএসটিইসি গ্রিড সংযোগ চুক্তি এ খাতে সহযোগিতার জন্য একটি মাইলফলক।”

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “২০০৪ সালে স্বাক্ষরিত বিআইএমএসটিইসি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়ন দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে, যাতে অঞ্চলটি আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।”

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “এই সমস্যা সমাধান না হলে পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিমসটেক শান্তিপূর্ণ সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।”

বিমসটেক গঠনের প্রায় ২৮ বছর পার হলেও এর বাস্তব প্রভাব এখনও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে তেমনভাবে দৃশ্যমান হয়নি বলে উল্লেখ করেন ইউনূস। তিনি বলেন, “এখন সময় এসেছে নতুন কৌশলের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যকারিতা বাড়ানোর।”

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের জনগণ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু গত পনেরো বছরে বিশেষ করে যুবসমাজ তাদের অধিকার সংকুচিত হতে দেখেছে। রাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে অবক্ষয় দেখা দিয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “একটি নৃশংস স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে প্রায় ২ হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যাদের মধ্যে ১১৮ জন শিশু।”

সবশেষে ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ তাদের ইতিহাসে এক নবজাগরণ প্রত্যক্ষ করেছে। এই নবযাত্রায় আমাদের সবার উচিত সহযোগিতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়া।”