ঢাকা ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
যুব মহিলালীগ নেত্রী লুনা হোসেন এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে মানববন্ধন ট্রাম্পের ‘শুল্ক বোমা’র আগে চীনের রপ্তানি ১২.৪% বৃদ্ধি ভারত থেকে ইউনুসকে সতর্ক বার্তা শেখ হাসিনার বেকার সাংবাদিক রাশেদুলের নিগ্রহের শিকার গৌতম আবারও ৮ লক্ষ টাকার ভারতীয় শাড়ী ও থ্রিপিচ জব্দ করেছে বংশাল থানা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেলেন বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ১৮ রানে চেন্নাই কে হারালো পাঞ্জাব এসএ টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। মাগুরার আছিয়া ধর্ষণ: ডিএনএ রিপোর্টে হিটু শেখের জড়িত থাকার প্রমাণ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন কোরিয়ার বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল
১লক্ষ ৬০ হাজার ১৮ উর্ধ বয়সীদের বাধ্যতামূলক নিয়োগ

রাশিয়ার ইতিহাসে বাধ্যতামূলক সর্বোচ্চ সেনা নিয়োগের ঘোষণা

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০১:৫০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

রাশিয়ায় সেনাবাহিনীর আকার বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী এক লাখ ৬০ হাজার তরুণকে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বলা হয়েছে। এটি ২০১১ সালের পর দেশটির সর্বোচ্চ সংখ্যক বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ।

কয়েক মাস আগেই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছিলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা ২৯ লাখে উন্নীত করা হবে এবং সক্রিয় সদস্য সংখ্যা হবে ১৫ লাখ। এই ঘোষণার ধারাবাহিকতায় এবার সেনা নিয়োগের সংখ্যা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী তিন বছরে এই সংখ্যা এক লাখ ৮০ হাজারে উন্নীত হবে বলে জানা গেছে।

রুশ সেনা মোতায়েন বিভাগের প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল ভ্লাদিমির সিমলিয়ানস্কি আশ্বস্ত করেছেন, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সেনাদের ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো হবে না। বরং সেজন্য “বিশেষ সামরিক অভিযান” বাহিনী রয়েছে। তবে, যুদ্ধের প্রথম দিকে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগ করা সেনাদের সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল এবং তাদের ইউক্রেনে পাঠানোর খবরও পাওয়া গিয়েছিল।

নতুন সেনা নিয়োগের এই কর্মসূচি এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চলবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরিষেবার ওয়েবসাইট গোসুসলুগি এবং মস্কোর সরকারি ওয়েবসাইট এমওএস ডট আরইউ-এর মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া ডাকযোগেও প্রার্থীদের সেনা নিয়োগের নোটিফিকেশন পাঠানো হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা করছে। তবে, এখনো সংঘাত কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের খেরসনের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে ৪৫ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। যদিও রাশিয়া এ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

রাশিয়ার বহু তরুণ বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ এড়াতে বিকল্প বেসামরিক চাকরির চেষ্টা করছে। মানবাধিকার আইনজীবী তিমোফেই ভাসকিন সতর্ক করেছেন যে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রতিটি বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ এক ধরনের লটারির মতো হয়ে উঠেছে।

কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কৌশলে সেনাবাহিনীর শূন্যপদ পূরণের চেষ্টা করছে। নিয়মিত বছরে দুইবার সেনা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বাইরে রাশিয়া উত্তর কোরিয়া থেকে ব্যাপকসংখ্যক যোদ্ধা এবং হাজার হাজার চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগ করছে।

বিবিসি ও মিডিয়াজোনার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত রুশ সেনার সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। তবে, আসল সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউক্রেন দখলের ঘোষণার পর থেকে পুতিন ইতোমধ্যে তিনবার সামরিক বাহিনীর আকার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ‘নেটোর ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণের’ কারণে সেনাবাহিনীর আকার বৃদ্ধি প্রয়োজন। রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে নেটো তার জোটে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

ফিনল্যান্ড সরকার জানিয়েছে, তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ২.৪% থেকে বাড়িয়ে ৩% করা হবে। এছাড়া, ফিনল্যান্ড ‘অটোয়া কনভেনশন’ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মানববিধ্বংসী মাইন নিষিদ্ধ করার আন্তর্জাতিক চুক্তি। পোল্যান্ডসহ আরও কয়েকটি বাল্টিক রাষ্ট্রও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাশিয়ার এই নতুন সেনা নিয়োগের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে রয়েছে। এটি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা বিভিন্ন মত প্রকাশ করছেন।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

যুব মহিলালীগ নেত্রী লুনা হোসেন এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে মানববন্ধন

১লক্ষ ৬০ হাজার ১৮ উর্ধ বয়সীদের বাধ্যতামূলক নিয়োগ

রাশিয়ার ইতিহাসে বাধ্যতামূলক সর্বোচ্চ সেনা নিয়োগের ঘোষণা

আপডেট সময় : ০১:৫০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫

রাশিয়ায় সেনাবাহিনীর আকার বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী এক লাখ ৬০ হাজার তরুণকে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বলা হয়েছে। এটি ২০১১ সালের পর দেশটির সর্বোচ্চ সংখ্যক বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ।

কয়েক মাস আগেই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছিলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা ২৯ লাখে উন্নীত করা হবে এবং সক্রিয় সদস্য সংখ্যা হবে ১৫ লাখ। এই ঘোষণার ধারাবাহিকতায় এবার সেনা নিয়োগের সংখ্যা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী তিন বছরে এই সংখ্যা এক লাখ ৮০ হাজারে উন্নীত হবে বলে জানা গেছে।

রুশ সেনা মোতায়েন বিভাগের প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল ভ্লাদিমির সিমলিয়ানস্কি আশ্বস্ত করেছেন, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সেনাদের ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো হবে না। বরং সেজন্য “বিশেষ সামরিক অভিযান” বাহিনী রয়েছে। তবে, যুদ্ধের প্রথম দিকে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগ করা সেনাদের সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল এবং তাদের ইউক্রেনে পাঠানোর খবরও পাওয়া গিয়েছিল।

নতুন সেনা নিয়োগের এই কর্মসূচি এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চলবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরিষেবার ওয়েবসাইট গোসুসলুগি এবং মস্কোর সরকারি ওয়েবসাইট এমওএস ডট আরইউ-এর মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া ডাকযোগেও প্রার্থীদের সেনা নিয়োগের নোটিফিকেশন পাঠানো হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা করছে। তবে, এখনো সংঘাত কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের খেরসনের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে ৪৫ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। যদিও রাশিয়া এ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

রাশিয়ার বহু তরুণ বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ এড়াতে বিকল্প বেসামরিক চাকরির চেষ্টা করছে। মানবাধিকার আইনজীবী তিমোফেই ভাসকিন সতর্ক করেছেন যে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রতিটি বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ এক ধরনের লটারির মতো হয়ে উঠেছে।

কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কৌশলে সেনাবাহিনীর শূন্যপদ পূরণের চেষ্টা করছে। নিয়মিত বছরে দুইবার সেনা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বাইরে রাশিয়া উত্তর কোরিয়া থেকে ব্যাপকসংখ্যক যোদ্ধা এবং হাজার হাজার চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগ করছে।

বিবিসি ও মিডিয়াজোনার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত রুশ সেনার সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। তবে, আসল সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউক্রেন দখলের ঘোষণার পর থেকে পুতিন ইতোমধ্যে তিনবার সামরিক বাহিনীর আকার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ‘নেটোর ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণের’ কারণে সেনাবাহিনীর আকার বৃদ্ধি প্রয়োজন। রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে নেটো তার জোটে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

ফিনল্যান্ড সরকার জানিয়েছে, তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ২.৪% থেকে বাড়িয়ে ৩% করা হবে। এছাড়া, ফিনল্যান্ড ‘অটোয়া কনভেনশন’ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মানববিধ্বংসী মাইন নিষিদ্ধ করার আন্তর্জাতিক চুক্তি। পোল্যান্ডসহ আরও কয়েকটি বাল্টিক রাষ্ট্রও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাশিয়ার এই নতুন সেনা নিয়োগের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে রয়েছে। এটি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা বিভিন্ন মত প্রকাশ করছেন।