দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) করোনাভাইরাস টিকা ক্রয়ে ২২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বেক্সিমকো ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
১৭ মার্চ সোমবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ভারত থেকে আমদানি করা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ টিকা বিতরণের খরচ ৪০ হাজার কোটি টাকা দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে খরচ হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। অবশিষ্ট ২২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালমান এফ রহমান ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর দুদকের উপপরিচালক আফরোজা হক খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি টিকা কেনার জন্য চুক্তি করে বাংলাদেশ। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। টিকা কেনার ওই চুক্তি প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ উল্লেখ করে অভিযোগে বলা হয়, কোভিড-১৯ টিকা কেনার ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয়বিধি অনুসরণ করা হয়নি এবং ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, যা আইনের লঙ্ঘন।
এছাড়া, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ভারত থেকে আমদানি করা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রতিটি ডোজ থেকে অন্যান্য সব খরচ মিটিয়ে ৭৭ টাকা করে লাভ করেছে। সরকার সরাসরি সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে টিকা আনলে প্রতি ডোজে যে টাকা বাঁচত, তা দিয়ে আরও ৬৮ লাখ বেশি টিকা কেনা যেত।
দুদক সূত্রে আরও জানা গেছে, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগেও অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এই অনুসন্ধানের মাধ্যমে করোনাভাইরাস টিকা ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা উদঘাটনের চেষ্টা করছে দুদক।