ঢাকা ১২:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ধানমন্ডিতে প্রাইভেটকার থেকে চাঁদা আদায়: অভিযুক্ত আশরাফুল তিন দিনের রিমান্ডে যুব মহিলালীগ নেত্রী লুনা হোসেন এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে মানববন্ধন ট্রাম্পের ‘শুল্ক বোমা’র আগে চীনের রপ্তানি ১২.৪% বৃদ্ধি ভারত থেকে ইউনুসকে সতর্ক বার্তা শেখ হাসিনার বেকার সাংবাদিক রাশেদুলের নিগ্রহের শিকার গৌতম আবারও ৮ লক্ষ টাকার ভারতীয় শাড়ী ও থ্রিপিচ জব্দ করেছে বংশাল থানা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেলেন বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ১৮ রানে চেন্নাই কে হারালো পাঞ্জাব এসএ টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। মাগুরার আছিয়া ধর্ষণ: ডিএনএ রিপোর্টে হিটু শেখের জড়িত থাকার প্রমাণ
উত্তরখানে চাঞ্চল্যকর উপাধ্যক্ষ হত্যার রহস্য উদঘাটন

হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উপাধ্যক্ষের খুনীদের গ্রেফতার

  • আরমান বাদল
  • আপডেট সময় : ০৭:১৩:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • ৩৪ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ মামলা রুজুর ১২ ঘন্টার মধ্যে দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির উত্তরখান থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মো. নাজিম হোসেন (২১) ও ২। রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) সকালে ফরিদপুর রেলষ্টেশন এলাকা হতে ফরিদপুর সদর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকান্ডের পরপরই ভিকটিমের ফ্ল্যাট হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বটি, একটি ধারালো চাকু ও রক্ত মাখা জামা-কাপড় এবং বিছানার চাদর উদ্ধার করে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় জব্দ করা হয়।

উত্তরখান থানা সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) রাত ২:০০ ঘটিকা থেকে ভোর ৪:০০ ঘটিকার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয় তলা বিল্ডিং এর ৪র্থ তলার ৬নং ফ্ল্যাটে খুন হন।

সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) বিকেলে বাদী সংবাদ পান তার বড় ভাইকে অজ্ঞাতানামা ব্যক্তিরা ধারালো অস্ত্র দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তার শয়ন কক্ষের ভিতর ফেলে রেখেছে। উল্লেখ্য, স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় সকাল ০৭.০০ ঘটিকার দিকে তিনি মারা যান। উত্তরখান থানা পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করে।

থানা সূত্র আরও জানায়, মামলাটি রুজুর পর ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ১২ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে উক্ত হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে উত্তরখান থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১১ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) সকালে ফরিদপুর রেলষ্টেশন এলাকা হতে ফরিদপুর সদর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে দুটি মোবাইলফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার ২/৩ দিন পূর্বে কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিকটিম মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার সাথে গ্রেফতাকৃত মো: নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার সুবাধে ভিকটিম গ্রেফতারকৃতদের তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া রুপা বেগম ওরফে জান্নাতিকে তাহার ফ্ল্যাটে আটক করে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করে।

গ্রেফতারকৃতরা নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত রাগ ও ক্ষোভ থেকে সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) রাতে ধারালো বটি দিয়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে উপযুর্পরী আঘাত করে। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মৃতুবরণ করেন।

তবে খুনিরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভিক্টিমের বাসায় গিয়ে খুন করেছে কিনা অথবা খুনিরা হত্যাকারী গ্রুপের সদস্য কিনা, সেই বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করা হয়েছে কিনা এবং খুনিরা অনিরাপদ মনে করলে ও অসৎ উদ্দেশ্যে বাসায় না থাকতে চাইলেই ভিক্টিমের বাসা ছেড়ে যেতে পারতো, কিন্তু না গিয়ে কেন হত্যা করল? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে তা সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,  এ খুনের ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় ১১ মার্চ ২০২৫ তারিখ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ভিকটিম সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় তার স্ত্রীর পৈত্রিক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য গত ৩/৪ মাস যাবৎ সে এলাকার একটি বাসায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতেন।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

ধানমন্ডিতে প্রাইভেটকার থেকে চাঁদা আদায়: অভিযুক্ত আশরাফুল তিন দিনের রিমান্ডে

উত্তরখানে চাঞ্চল্যকর উপাধ্যক্ষ হত্যার রহস্য উদঘাটন

হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উপাধ্যক্ষের খুনীদের গ্রেফতার

আপডেট সময় : ০৭:১৩:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ মামলা রুজুর ১২ ঘন্টার মধ্যে দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির উত্তরখান থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মো. নাজিম হোসেন (২১) ও ২। রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) সকালে ফরিদপুর রেলষ্টেশন এলাকা হতে ফরিদপুর সদর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকান্ডের পরপরই ভিকটিমের ফ্ল্যাট হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বটি, একটি ধারালো চাকু ও রক্ত মাখা জামা-কাপড় এবং বিছানার চাদর উদ্ধার করে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় জব্দ করা হয়।

উত্তরখান থানা সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) রাত ২:০০ ঘটিকা থেকে ভোর ৪:০০ ঘটিকার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয় তলা বিল্ডিং এর ৪র্থ তলার ৬নং ফ্ল্যাটে খুন হন।

সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) বিকেলে বাদী সংবাদ পান তার বড় ভাইকে অজ্ঞাতানামা ব্যক্তিরা ধারালো অস্ত্র দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তার শয়ন কক্ষের ভিতর ফেলে রেখেছে। উল্লেখ্য, স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় সকাল ০৭.০০ ঘটিকার দিকে তিনি মারা যান। উত্তরখান থানা পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করে।

থানা সূত্র আরও জানায়, মামলাটি রুজুর পর ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ১২ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে উক্ত হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে উত্তরখান থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১১ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) সকালে ফরিদপুর রেলষ্টেশন এলাকা হতে ফরিদপুর সদর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে দুটি মোবাইলফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার ২/৩ দিন পূর্বে কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিকটিম মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার সাথে গ্রেফতাকৃত মো: নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার সুবাধে ভিকটিম গ্রেফতারকৃতদের তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া রুপা বেগম ওরফে জান্নাতিকে তাহার ফ্ল্যাটে আটক করে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করে।

গ্রেফতারকৃতরা নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত রাগ ও ক্ষোভ থেকে সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) রাতে ধারালো বটি দিয়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে উপযুর্পরী আঘাত করে। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মৃতুবরণ করেন।

তবে খুনিরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভিক্টিমের বাসায় গিয়ে খুন করেছে কিনা অথবা খুনিরা হত্যাকারী গ্রুপের সদস্য কিনা, সেই বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করা হয়েছে কিনা এবং খুনিরা অনিরাপদ মনে করলে ও অসৎ উদ্দেশ্যে বাসায় না থাকতে চাইলেই ভিক্টিমের বাসা ছেড়ে যেতে পারতো, কিন্তু না গিয়ে কেন হত্যা করল? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে তা সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,  এ খুনের ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় ১১ মার্চ ২০২৫ তারিখ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ভিকটিম সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় তার স্ত্রীর পৈত্রিক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য গত ৩/৪ মাস যাবৎ সে এলাকার একটি বাসায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতেন।