বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডার শাকিব আল হাসান, যিনি এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অবসর ঘোষণা করেননি, দীর্ঘদিন ধরে খেলার বাইরে। প্রায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট থেকেও তিনি দূরে ছিলেন। তবে এখন শোনা যাচ্ছে, তিনি আবার মাঠে ফিরছেন। কিন্তু এবারের কামব্যাকের বিশেষত্ব হল, শাকিব খেলবেন বাংলাদেশের বিপক্ষে, যার মধ্যে রয়েছে এক অসাধারণ গল্প।
আগামী ১০ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে এশিয়ান লেজেন্ডস লিগ, যেখানে অংশগ্রহণ করবেন অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটাররা। পাঁচটি দলের মধ্যে বাংলাদেশের দল ‘বাংলাদেশ টাইগার্স’ ছাড়াও থাকছে ‘ইন্ডিয়ান রয়্যালস’, ‘আফগানিস্তান পাঠানস’, ‘শ্রীলঙ্কান লায়ন্স’ এবং ‘এশিয়ান স্টার্স’। এই প্রতিযোগিতায় সব দেশের অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটাররা প্রতিনিধিত্ব করবেন। আর বিশেষত্ব এই যে, ‘এশিয়ান স্টার্স’ দলটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে অংশ নেবেন বিভিন্ন দেশের শীর্ষ খেলোয়াড়রা।
শুরুতে শাকিব আল হাসান তাঁর দেশের ‘বাংলাদেশ টাইগার্স’ দলের হয়ে খেলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ‘এশিয়ান স্টার্স’-এ যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ভারতীয় কেদার যাদব, সৌরভ তিওয়ারি, শ্রীলঙ্কার দিলশান মুনাওয়ারা এবং পাকিস্তানের শাহবাজ নাদিমের মতো প্রাক্তন তারকারাও। বাংলাদেশ দলের আরেক সাবেক ক্রিকেটার অলোক কাপালি এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মহম্মদ আশরাফুলও খেলবেন এই প্রতিযোগিতায়।
শাকিবের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ তিনি এই টুর্নামেন্টে নিজের দেশের বিপক্ষে খেলতে নামবেন। এর ফলে কিছুটা বিতর্কের জন্ম হয়েছে, বিশেষ করে সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে যখন শাকিব জাতীয় দলে খেলতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়েছিলেন। তার শেষ টেস্টটি তিনি নিজ দেশে খেলতে চাইলেও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে তাতে বাধা আসে, যার ফলস্বরূপ তাঁকে জাতীয় দলে আর খেলার সুযোগ হয়নি। যদিও পরে তিনি বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে অংশ নিয়েছিলেন, তবে অ্যাকশন সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কারণে সেই খেলাও বন্ধ হয়ে যায়।
শাকিব আল হাসান এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে অবসর ঘোষণা না করলেও, অবসরপ্রাপ্তদের জন্য আয়োজন করা এই লিগে অংশগ্রহণ করছেন। এর ফলে অনেকেই মনে করছেন, এই ইঙ্গিত হয়তো তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তির দিকে। তবে তা সত্ত্বেও তিনি জাতীয় দলে ফিরবেন কি না, তা নিয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত ঘোষণা হয়নি।
এবার শাকিবের কামব্যাকের মধ্যে, নিজের দেশের বিরুদ্ধে খেলাই তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারের একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, শাকিব কি অবসর নিয়ে বা নিজেকে প্রাক্তন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে নতুনভাবে শুরু করতে চান? সময়ই তার উত্তর দেবে।